Monday, August 29, 2016

জিন্দা পার্ক

কুড়িল-বিশ্বরোড থেকে মাত্র ২৫/৩০ মিনিটের গাড়িপথ পাড়ি দিলেই নাগাল পেয়ে যাবেন এই ব্যতিক্রমী পার্কটি। ব্যতিক্রমী এজন্য যে আর দশটা পার্কের মতো এর গঠনশৈলী নয়।
ওই এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, জীব-বৈচিত্র রক্ষা/ সংরক্ষণ এবং সুস্থ ও নির্মল বিনোদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সামাজিক অবকাঠামোরূপে এই জিন্দাপার্কটির যাত্রা শুরু। প্রকৃতির স্বাভাবিকতা বজায় রেখে তৈরী করা হয়েছে এখানকার সব অবকাঠামো।
জিন্দা পার্ক টি নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের জিন্দা গ্রামে অবস্থিত। দাউদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত জিন্দা পার্ক দশর্মীয় স্থান হিসেবে দর্শকদের মন কারে । জিন্দা পাকে বিভিন্ন সময়ে ঢাকা থেকে  ও ঢাকার বাইরে থেকে দর্শনার্থী এসে ভিড় জমায়। এর সাথে সম্পিক্ত আছে জিন্দা গ্রাম ও আশে পাশের কিছু লোক জন। পুবার্চল উপশহরের পাশে এর অবস্থান।
এখানে রয়েছে প্রায় ১০০ প্রজাতির কুড়ি হাজার গাছগাছালি। সেখানে রয়েছে ফলদ, বনজ
ও বহুমূল্যের জীবনদায়ী ভেষজ- ঔষধি গাছ। রয়েছে টিলা, ছোটখাল। পার্কের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ এই তিনদিকে সুরক্ষা বেষ্টনীর মত ঘিরে রয়েছে লেক বা ছোট খালের জলধারা। মাঝে নৌকা নিয়ে ঘোরার জন্য রয়েছে গোলাকার জলাধার, মাঝখানে দ্বীপের মত জেগে থাকা মাটির বুকে ছাতাঘর। এছাড়াও এখানে রয়েছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত একটি স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিক, খেলার মাঠ, কবরস্থান, শ্মশান, ট্যুরিস্ট লজ, রেস্তোরা।
সকাল-সন্ধ্যা এখানে গাছগাছালী জলাধার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মাটির গন্ধ শুঁকে হাটতে হাটতে হরেক রকম পাখ-পাখালির কুজন শুনতে পারবেন, পুকুরের নিস্তরঙ্গ জলে হাত পা ভিজিয়ে নিয়ে শরীর মনকে চাঙ্গা করতে পারবেন। মাত্র পাঁচ জন যুবকের নিষ্ঠা, শ্রম, সততা এবং মোটে ৬০ টাকাকে পুঁজি করে ১৯৮০ সালে যাত্রা শুরু হয় জিন্দা নামক এই পার্কটির।
প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপর অবস্থিত এই জিন্দা পার্কটির কর্মকাণ্ডে পরবর্তীতে পাশ্ববর্তী পাড়া-গ্রামের দশ সহস্রাধিক লোক পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। গত তিন
দশকেরও বেশি সময় ধরে ‘অগ্রপথিক-পল্লী সমিতি’-র সভ্যগণ স্থানীয়দের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতায় তিল তিল করে তাদের স্বপ্নের ইমারতটাকে দৃশ্যমান করে তুলছেন দেশবাসীর চোখে।
নিজেদের জমিদান, ক্রয়, পতিত কিছু ভূমিকে পরিকল্পনা অনুসারে সাজিয়ে তুলেছেন সময় ধরে, থরে থরে। জনগণের সঞ্চয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ ও বিনিয়োগকৃত পাঁচ কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে নির্মিত এই পার্কটির সাথে তাদের অনেকের জীবন-জীবিকাও জড়িত। একঝাঁক উদ্যোমী, অক্লান্ত পরিশ্রমী, কর্মঠ যুবক, সহৃদয়বান ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুদান, অনুপ্রেরণা আর সহযোগিতার পূর্ণ রূপ হলো এই জিন্দাপার্কটি।