সবুজের সাথে মিতালি করতে চাইলে চলে আসুন শেরপুরের অর্কিড
পর্যটন প্রকল্পে। শেরপুর জেলা শহরের মধ্যেই ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ‘অর্কিড
পর্যটন প্রকল্প’। এ প্রকল্পের চারদিকে রয়েছে সারি সারি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির
গাছ, মাঠ ভরা সবুজ ঘাস আর শান বাঁধানো পুকুর। পুকুরের চারপাশে মাছ খেতে ভিড় করে রোজ
সাদা বক।
অর্কিড পর্যটন প্রকল্পের সোভা বর্ধনে চারিদিকে লাগানো হয়েছে সারি সারি দেশী-বিদেশী
বিভিন্ন প্রজাতীর গাঢ় সবুজ লম্বা গাছ, মাঠ জুড়ে রয়েছে মিশিনে কাঁটা এক মাপের বিশেষ
সবুজ ঘাস, চোখ ধাঁধাঁনো নির্মল টলমলা জলের পুকুর আর সান বাঁধানো জমিদারি পুকুর ঘাট
। পুকুরের চার পাশে মাছ শিকারে আসে সাদা ধবধবে বক। সবুজের ওই অর্কিডের খাঁচা
থেকে আনন্দ দেয় বানর, টার্কিছ, খোরগোশসহ দেশীয় বিভিন্ন জীবজন্তু। সারা অর্কিড জুড়ে
নানা প্রজাতির বাহারি থোকা থোকা ফুল অপেক্ষায় আছে দর্শনার্থিদের নির্মল আনন্দ বিলিয়ে
দেওয়ার জন্য। অর্কিডে হাটার জন্য নির্মান করা হয়েছে সরু রাস্তা। আর রাস্তা গুলোতে ইটের
উপর মনের মাধুরি মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে রং। সব মিলিয়ে এ যেন এক স্বপ্নপূরি।
প্রিয়জন অথবা বন্ধ-বান্ধবদের নিয়ে বসে আড্ডা দেয়ার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় বড় ছাতা
এবং ছাতার নিচে বসার জন্য রয়েছে চেয়ার। চা, কফি ও সেভেন-আপ বা কোকাকোলা পানের জন্য
রয়েছে ছনের তৈরী সুদৃশ্য ক্যান্টিন এবং রেস্ট হাউজ। এ যেন ্ইট বালুর যান্ত্রিক শহরের
মধ্যে মন খুলে আনন্দ করার এক লীলা ভুমি। পরিবার-পরিজন বা প্রিয়জন নিয়ে বেড়ানো
ও প্রকৃতির সাথে মিতালি করার বা শহুরে জীবনের এক ঘিয়েমি কাটাতে চমৎকার একটি বিনোদন
কেন্দ্র ।
শেরপুর জেলা শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের শেরপুর-ঝিনাইগাতী ফিডার রোড সংলগ্ন কান্দাপাড়া মহল্লার
স্থানীয় চাতাল ব্যাবসায়ী মোঃ আজাহার আলী ১৯৯০ সালে প্রাথমিকভাবে তার ধানের খলার পাশেই
প্রায় সারে পাঁচ একর জমির উপর সম্পূর্ণ ব্যাক্তি খরচে নানা জাতের দেশি-বিদেশি বনজ ও
ফলজ গাছ-গাছরা রোপণ করে গড়ে তলেন ‘অর্কিড’ বাগান। শুরুতে এই বাগান অবশ্য পরিচিতি লাভ
করেছিল ‘কলা বাগান’ হিসেবে। এরপর নানা প্রতিকূলতার মধ্যে এই বাগানের সৌন্দর্য হারানোর
পর আবার ২০০৮ সাল থেকে অর্কিড মালিক আজাহার আলী তার মনের মাধুরি মিশিয়ে নানা অবকাঠামো
তৈরির মাধ্যমে নতুন করে গড়ে তোলেন ‘অর্কিড পর্যটন প্রকল্প’।
এই অর্কিড পর্যটন প্রকল্পে প্রবেশ করতে সেচ্ছাদান হিসেবে ২০ টাকা করে ধার্য করেছেন
তিনি। প্রতিদিন এখানে বেড়াতে আসছে শহরবাসী এবং জেলার অন্যান্য স্থানের লোকজন। বিশেষ
করে ছুটির দিনে বেড়াতে আসা লোকজনের ভিড় হয় বেশি। কেউ যদি অর্কিড বাগান রিজার্ভ করে
প্রাতিষ্ঠানিক বা পারিবারিক কোন অনুষ্ঠান করতে চায় তবে দিন চুক্তি ৫ হাজার টাকায় বুকিং
করতে হয়। আপাতত রাত্রি যাপনের কোন ব্যাবস্থা না থাকলেও ভবিষ্যতে এখানে আবাসিক বাংলোসহ
ভ্রমণবিলাসী ও বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য নানা সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা
রয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত (সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত) অর্কিডে বেড়ানোর
সুযোগ রয়েছে। সন্ধ্যার পর কোন দর্শনার্থীকে ভিতরে থাকতে দেওয়া হয় না।
যেভাবে যাবেন:
দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে বাসে বা যে কোনো যানবাহনে
আসা যায় শেরপুর শহরে। শেরপুর জেলা শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের শেরপুর-ঝিনাইগাতী
ফিডার রোড সংলগ্ন কান্দাপাড়া মহল্লায় এই অর্কিড পর্যটন কেন্দ্র।